বাল অপরাধীগণ | শিশু আইন

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় বাল অপরাধীগণ

বাল অপরাধীগণ

 

বাল-অপরাধীগণ

 

৪৮। গ্রেফতারকৃত শিশুর জামিন।

যে ক্ষেত্রে আপাতঃ দৃষ্টিতে ১৬ বৎসরের কম বয়স্ক কোন ব্যক্তিকে জামিনের অযোগ্য অপরাধের দায়ে গ্রেফতার করা হয় এবং অবিলম্বে আদালতে হাজির করা যায় না, সে ক্ষেত্র পর্যন্ত জামানত পাওয়া গেলে, তাহাকে যে থানায় আনা হইয়াছে সেই থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার জামিনে খালাস দিতে পারেন,

কিন্তু যে ক্ষেত্রে খালাস দেওয়া হইলে উক্ত ব্যক্তি কোন কুখ্যাত অপরাধীর সাহচর্য লাভ করিবে অথবা নৈতিক বিপদের সম্মুখীন হইবে অথবা যে ক্ষেত্রে তাহাকে খালাস দেওয়ার কারণে ন্যায় বিচারের উদ্দেশ্যে বা অভিপ্রায় ব্যাহত হয় সে ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে খালাস দেওয়া যাইবে না।

৪৯। জামিনে খালাস প্রাপ্ত নহে এইরূপ শিশুর হেফাজত।-

(১) যে ক্ষেত্রে আপাতঃ দৃষ্টিতে ১৬ বৎসরের কম বয়স্ক কোন ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়ার পর ৪৮ ধারার অধীনে খালাস না পায়, সে ক্ষেত্রে যত দিন তাহাকে আদালতে হাজির করা না যায় তত দিন পর্যন্ত তাহাকে রিমান্ড হোম অথবা কোন নিরাপদ স্থানে আটক রাখিবার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। 

(২) যে শিশু জামিনে খালাসপ্রাপ্ত হয় নাই তাহাকে বিচারে প্রেরণ করিয়া আদালত তাহাকে কোন রিমাণ্ড হোম অথবা নিরাপদ স্থানে আটক রাখিবার জন্য আদেশ দিবেন ।

৫০। গ্রেফতারের পর প্রবেশন অফিসারের নিকট পুলিশ কর্তৃক তথ্য পেশ।

কোন শিশুকে গ্রেফতারের পর অবিলম্বে তাহা প্রবেশন অফিসারকে অবহিত করা পুলিশ অফিসার অথবা অন্য কোন গ্রেফতারকারী ব্যক্তির কর্তব্য, যাহার উদ্দেশ্য হইতেছে আদালতকে উহার আদেশ প্রদানে সহায়তার নিমিত্ত উক্ত শিশুর পূর্ব পরিচয় এবং পারিবারিক ইতিহাস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য অবিলম্বে উদ্যোগ লইতে প্রবেশন অফিসারকে সামর্থ্য করা ।

৫১। শিশুকে সাজা প্রদানে বাধা-নিষেধ।-

(১) অন্য কোন আইনে . বিপরীত কিছু থাকা সত্ত্বেও কোন শিশুকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা কারাদণ্ড প্রদান করা যাইবে না :

তবে শর্ত থাকে যে, কোন শিশুকে যখন এইরূপ মারাত্বক ধরনের অপরাধ করিতে দেখা যায় যে, তজ্জন্য এই আইনের অধীনে প্রদান যোগ্য কোন শাস্তি আদালতের মতে পর্যাপ্ত নহে, অথবা আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, শিশুটি এত বেশী অবাধ্য অথবা ভ্রষ্ট চরিত্রের যে তাহাকে কোন প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউটে প্রেরণ করা চলে না এবং অন্যান্য যে সকল আইনানুগ পন্থা মামলাটির সুরাহা হইতে পারে উহাদের কোন একটিও তাহার জন্য উপযুক্ত নহে, তাহা হইলে আদালত শিশুটিকে কারাদণ্ড প্রদান অথবা যেরূপ উপযুক্ত মনে করেন সেইরূপ স্থানে বা শতে আটক রাখিবার আদেশ দিতে পারেন;

আরও শর্ত থাকে যে, এইরূপ আদেশে আটকের মেয়াদ তাহার অপরাধের জন্য প্রদেয় দণ্ডের সর্বোচ্চ মেয়াদের অধিক হইবে না : আরও শর্ত থাকে যে, এইরূপ আটক থাকাকালে কোন সময়ে আদালত উপযুক্ত মনে করিলে নির্দেশ দিতে পারেন যে, এইরূপে আটক রাখার পরিবর্তে বা অপরাধীকে তাহার বয়স ১৮ বৎসর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোন প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউটে রাখিতে হইবে।

(২) কারাদণ্ডে দণ্ডিত কোন বাল-অপরাধীকে প্রাপ্ত বয়স্ক বন্দীর সঙ্গে মেলামেশা করিতে দেওয়া যাইবে না ।

 

google news logo
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

৫২। শিশুকে প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউটে সোপর্দ।

কোন শিশু মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইলে আদালত তাহার ক্ষেত্রে সমীচীন বিবেচনা করিলে অন্যূন দুই বৎসর এবং অনধিক দশ বৎসর মেয়াদে আটক রাখিবার জন্য কোন প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউটে সোপর্দ করিতে আদেশ দিতে পারেন কিন্তু কোন ক্রমেই আটকের মেয়াদ শিশুর বয়স ১৮ বৎসর পূর্ণ হওয়ার পর আর বৃদ্ধি করা যাইবে না ।

৫৩। বাল-অপরাধীকে খালাস দেওয়া অথবা উপযুক্ত হেফাজতে সোপর্দ করার ক্ষমতা।-

(১) আদালত উপযুক্ত বিবেচনা করিলে, কোন বাল- অপরাধীকে ৫২ ধারার অধীনে প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউটে আটক রাখিবার নির্দেশদানের পরিবর্তে তাহাকে – –

              (ক) যথাযথ সাবধান করার পর খালাস দিতে পারিবেন, অথবা 

              (খ) সদাচরণের উদ্দেশ্যে প্রবেশনে মুক্তি প্রদান করিতে পারিবেন এবং তাহার পিতা-মাতা বা অন্য প্রাপ্ত বয়স্ক আত্মীয় অথবা অন্য উপর্যুক্ত ব্যক্তি উক্ত বাল অপরাধীর অনধিক তিন বৎসর কাল সদাচারণের জন্য দায়ী থাকিবেন এই মর্মে জামিনসহ অথবা বিনা জামিনে, আদালত যেরূপ নির্দেশ দিবেন সেইরূপ মুচলেকা দানের পর বাল অপরাধীকে তাহার পিতা-মাতা অথবা অন্য প্রাপ্ত বয়স্ক কোন আত্মীয় অথবা অন্য উপযুক্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে সোপর্দ করিতে পারিবেন এবং আদালত আরও আদেশ দিতে পারিবেন যে, বাল অপরাধীকে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে রাখিতে হইবে।

(২) প্রবেশন অফিসারের নিকট হইতে রিপোর্ট পাওয়া অথবা প্রকারান্ত রে যদি আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, বাল অপরাধী তাহার প্রবেশন কালে সদাচারণ করে নাই, তাহা হইলে আদালত যেইরূপ উপযুক্ত মনে করেন সেইরূপ তদন্ত করিবার পর বাল অপরাধীকে প্রবেশন কালের অসমাপ্ত সময়ের জন্য প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউটে আটক রাখিবার আদেশ দিতে পারিবেন ।

৫৪। পিতা-মাতাকে জরিমানা, ইত্যাদি পরিশোধের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা।-(১) যে ক্ষেত্রে কোন শিশু অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়, যে ক্ষেত্রে আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট না হন যে, শিশুর পিতা মাতা অথবা অভিভাবককে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না অথবা শিশুর প্রতি যথাযথ যত্নবান হইতে অবহেলা করিয়া তিনি শিশুকে অপরাধ সংঘটনে সাহায্য করেন নাই, তাহা হইলে আদালত শিশুর পিতা মাতা অথবা অভিভাবককে জরিমানা পরিশোধের আদেশ প্রদান করিবেন।

 

বাল-অপরাধীগণ

 

(২) যে ক্ষেত্রে শিশুর পিতা-মাতা অথবা অভিভাবক (১) উপ-ধারার অধীনে জরিমানা প্রদানের আদেশ প্রাপ্ত হইয়াছেন সে ক্ষেত্রে কার্যবিধির বিধান মোতাবেক উক্ত অর্থ আদায় করা যাইবে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment