আজকে আমরা আলোচনা করবো ভূমি উন্নয়ন কর কেন, কী হারে দেবেন
Table of Contents
ভূমি উন্নয়ন কর কেন, কী হারে দেবেন
ভূমি উন্নয়ন কর সাধারণত খাজনা নামে পরিচিত হলেও এর রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস । প্রাচীনকাল থেকেই ভূ-স্বামী, রাজাগণ তাদের অধীনস্ত প্রজাদের নিকট হতে উৎপাদিত ফসলের অংশ বিশেষ খাজনা হিসাবে আদায় করতেন। পরবর্তীতে হিন্দু আমল, মুসলিম আমল, ইংরেজ আমল হয়ে আধুনিক সরকার ব্যবস্থায় ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা সরকারের আয়ের একটি অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে।
ভূমি উন্নয়ন কর যে জন্য দেবেন
(1) ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা মালিকানা প্রমাণের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে
(11) ভূমি উন্নয়ন কর নিয়মিত প্রদান করলে রেকর্ড হালনাগাদ থাকে;
(111) নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করলে দুষ্ট লোকেরা রেকর্ড টেম্পারিং এর সুযোগ নিতে পারে। অনেক সময় একজন আরেকজনের জমি গোপনে নামজারী / রেকর্ড করিয়ে নেয়, জমির মালিক নিজের জমির খোঁজ-খবর না রাখার কারণে ঐরূপ নামজারীর বিরুদ্ধে আপিলও করতে পারে না;
(iv) ভূমি উন্নয়ন কর দীর্ঘদিন বকেয়া রাখলে জমি নিলাম হতে পারে।
তাই ভূমি উন্নয়ন কর নিজের স্বার্থেই নিয়মিত পরিশোধ করা উচিত।
কৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার
সরকার ১৩৭৮ বাংলা সনসহ পূর্ববর্তী সকল খাজনা ও সেস মওকুফ করে দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ের খাজনা আদায়ের হার বাংলা সন ভিত্তিক নিম্নরূপ
১। ১৩৭৯-১৩৮২ সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার :
(ক) কোন পরিবারের ২৫ বিঘার ঊর্ধ্বে জমি থাকলে তার খতিয়ানে উল্লিখিত খাজনাসহ সেস আদায় করতে হবে।
(খ) কোন পরিবারের ২৫ বিঘার নিম্নে জমি থাকলে শুধু সেসাদি আদায় করতে হবে।
২। ১৩৮৩-১৩৮৮ সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার
(ক) ২৫ বিঘা পর্যন্ত প্রতি বিঘা ৯০ পয়সা।
(খ) ২৫ বিঘার ঊষা হলে প্রতি বিঘা ৫/- টাকা হারে আদায় করতে হবে।
৩। ১৩৮৯–১৩৯৩ সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের হার
(ক) পরিবার প্রতি ২ একর পর্যন্ত জমি থাকলে প্রতি শতাংশ ও পয়সা সর্বনিম্ন ১/- টাকা।
(খ) কোন পরিবারের ২ একরের ঊর্ধ্ব হতে ৫ একর পর্যন্ত জমি থাকলে প্রথম দুই একরের জন্য ৬/- টাকা এবং অতিরিক্ত প্রতি শতাংশের জন্য ১৫ পয়সা।
(গ) কোন পরিবারের ৫ একরের ঊর্ধ্ব হতে ১০ একর পর্যন্ত জমি থাকলে প্রথম ৫ একরের জন্য ৫১/- টাকা এবং অতিরিক্ত প্রতি শতাংশের জন্য ৩৬ পয়সা।
(ঘ) কোন পরিবারের ১০ একরের ঊর্ধ্ব হতে ১৫ একর পর্যন্ত জমি থাকলে প্রথম ১০ একরের জন্য ২৩১/- টাকা এবং অতিরিক্ত প্রতি শতাংশের জন্য ৬০ পয়সা।
(ঙ) কোন পরিবারের ১৫ একরের ঊর্ধ্ব হতে ২৫ একর পর্যন্ত জমি থাকলে প্রথম ১৫ একরের জন্য ৫৩১/- টাকা এবং অতিরিক্ত প্রতি শতাংশের জন্য ৯৫ পয়সা।
(চ) কোন পরিবারের ২৫ একরের ঊর্ধ্ব জমি থাকলে প্রথম ২৫ একরের জন্য ১৪৮১/- টাকা এবং অতিরিক্ত প্রতি শতাংশের জন্য ১/- টাকা ৪৫ পয়সা।
৪। ১৩৯৪-১৪০১ সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন করের হার
(ক) কোন পরিবারের সর্বোচ্চ ২ একর জমি থাকলে প্রতি শতাংশ ৩ পয়সা হারে, তবে সর্বনিম্ন ১/- টাকা ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে হবে।
(খ) কোন পরিবারের ২ একরের ঊর্ধ্ব হতে ৫ একর পর্যন্ত জমি থাকলে প্রতি শতাংশ ৩০ পয়সা।
(গ) কোন পরিবারের ৫ একরের ঊর্ধ্ব হতে ১০ একর পর্যন্ত জমি থাকলে প্রতি শতাংশ ৫০ পয়সা।
(ঘ) কোন পরিবারের ১০ একরের ঊর্ধ্বে জমি থাকলে প্রতি শতাংশ ২/- টাকা । (যোগসূত্র স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শ-৩/৬৯/৮৭/১২/ তাং ১০/৫/১৪ বাং, ২৭/৮/৭ইং)
২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষকের কৃষি জমির কর মওকুফ : ভূমি মন্ত্রণালয় স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শা-৩/কর/৮/৯১-১৩২ (৬০০), তাং ২০-১-৯৮ বাং, ৪-৫-৯১ ইং মূলে ১৩৯৮ বাংলা সনের ১লা বৈশাখ হতে ২৫ বিঘা (৮ ২৫ একর) পর্যন্ত কৃষকদের কৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ ঘোষণা করেছে।
তবে অকৃষিজীবীর কৃষিজমি/সমিতি/সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন কৃষিজমির ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ করা হয়নি। এরূপ কৃষিজমির কর আদায় করতে হবে।
৫। ১৪০২ সন হতে ভূমি উন্নয়ন করের হার
(ক) ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ।
(খ) ২৫ বিঘা ঊর্ধ্ব হতে ১০ একর পর্যন্ত প্রতি শতাংশ ৫০ পয়সা।
(গ) ১০ একরের ঊর্ধ্ব জমির জন্য প্রতি শতাংশ ১/- টাকা। (যোগসূত্র স্মারক নং- ভূঃমঃ/শা-৩/কর/১০০/১২-১০৬ (১০০০) তারিখ ১৬/২/১৪০২ বাং, ৩০/৫/৯৫ ইং)।
৬। ১৪০২ সন হতেঃ চা বাগান, রাবার বাগান, আমবাগান বা ১ একরের ঊর্ধ্বে ফল বা ফুলের বাগানের জমির প্রতি শতাংশের ভূমি উন্নয়ন কর ১/- টাকা ১০ পয়সা হারে আদায় করতে হবে।
৭। পল্লী এলাকার আবাসিক জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার
পল্লী এলাকায় বসবাসকারী কৃষি পরিবারের চাষের জমি এবং বসত বাড়ি ‘কৃষি’ জমি গণ্য করে ‘কৃষি হারে’ ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে হবে (অনুঃ ২৭-ভূঃ বাঃ ম্যানুঃ) তবে পল্লী এলাকার পাকা ভিটি বাড়ির ভূমি উন্নয়ন কর ১৪০২ সন হতে প্রতি শতাংশ ৫/- টাকা হারে আদায় করতে হবে (ভূঃমঃ/শা-৩/কর/১০০/১২-১০৬ (১০০০)
তাং ৩০/৫/৯৫ ইং)।
৮। গুরুত্বপূর্ণ এলাকার আবাসিক জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা মহানগরীর মত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার আবাসিক ভূমির কর প্রতি শতাংশ ২২/- টাকা। জেলা সদরের (ঘনবসতিপূর্ণ জেলা ব্যতীত) পৌর এলাকার করের হার প্রতি শতাংশ ৭/- টাকা এবং অন্যান্য সকল পৌর এলাকার আবাসিক ভূমি কর প্রতি শতাংশ ৬/- টাকা ।
৯। অকৃষি জমির এলাকা ও ব্যবহার ভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন করের হার
বৎসর (বাংলা) | জমির অবস্থান | শিল্প/বাণিজ্য | আবাসিক |
১৩৮৩ – ১৩৮৮ | ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার কতিপয় উপজেলা | প্রতি বিঘা ৫০০/- টাকা | প্রতি বিঘা ১০০/- টাকা |
উপরে বর্ণিত এলাকা ব্যতীত জেলা সদর এলাকা | প্রতি বিঘা ১০০/- টাকা | প্রতি বিঘা ৫০/- টাকা | |
১৩৮৯ ১৩৯১ | ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কতিপয় উপজেলা | ৬০/- টাকা | ১২/- টাকা |
অন্যান্যজেলা সদরের পৌর এলাকা | ১০/- টাকা | ৪/- টাকা | |
উপরে বর্ণিত এলাকা ব্যতীতঅন্যান্য এলাকা | ৮/- টাকা | ৩/- টাকা | |
১৩৯২- ১৪০০ | ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কতিপয় এলাকা | ১০০/- টাকা | ২০/- টাকা |
অন্যান্যজেলা সদরের পৌর এলাকা | ২০/- টাকা | ৬/- টাকা | |
উল্লিখিত এলাকা ব্যতীত অন্য এলাকা | ১৫/- টাকা | ৫/- টাকা | |
১৪০২ সন হতে | ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কতিপয় এলাকা | ১২৫/- টাকা | ২২/- টাকা |
অন্যান্য জেলা সদরের পৌর এলাকা | ২২/- টাকা | ৬/৫০- টাকা | |
উল্লিখিত এলাকা ব্যতীতঅন্যান্য এলাকা | ১৭/- টাকা | ৫/২৫- টাকা | |
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ জেলার কতিপয় এলাকা | ১২৫/- টাকা | ২২/- টাকা | |
অন্যান্য জেলা সদরের পৌর এলাকা | ২২/- টাকা | ৭/- টাকা | |
জেলা সদরের বাইরের অন্যন্য পৌর এলাকা | ১৭/- টাকা | ৬/- টাকা | |
পৌর এলাকা ঘোষিত হয়নি এরূপ এলাকা | ১৫/- টাকা | ৫/- টাকা
(পাকা ভিটি) |
১। ঢাকা-ঢাকা মহানগরীর সকল থানা ও কেরানীগঞ্জ।
২। চট্টগ্রাম- কোতয়ালী, পাঁচলাইশ, ডবলমুরিং, সীতাকুণ্ড, বন্দর, হাটহাজারী।
৩। খুলনা- কোতয়ালী, দৌলতপুর, দীর্ঘলিয়া ও ফুলতলা।
৪ । নারায়ণগঞ্জ-বন্দর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ ।
৫। গাজীপুর-টঙ্গী ও জয়দেবপুর এলাকা ।
অকৃষি জমির সংজ্ঞা
(ক) কৃষি জমি বাদে অন্যান্য সকল জমি অকৃষি জমি।
(খ) শহর/পৌর এলাকার কোন জমি অকৃষি কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত রাখলে তা অকৃষি জমি ।
(গ) শহর/পৌর এলাকার বাইরের কোন জমি শিল্প/বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হলে তা অকৃষি জমি ।
(ঘ) শিল্প/বাণিজ্য/আবাসিক বা অন্য কোন অকৃষি কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণকৃত জমি অকৃষি জমি।
(ঙ) শহর/পৌর এলাকাভুক্ত কোন জমি কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হলে (তবে শিল্পের কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য নয়) সে জমিকে কৃষিজমি গণ্য করা যাবে ।
ভূমি মন্ত্রণালয় স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শা-৩/কর। /১০০/৯২/৩৬৬ তাং ২৩-২-১৪০১ বাং, ৬-৬-৯৪ইং এর পরিপত্র মূলে একই মন্ত্রণালয়ের ৭-১-১৪০০ বাং, ২৪-৪-১৯৯৩ ইং তারিখের ভূঃমঃ/শা-৩/কর/১০০/৯২/২০৮ (৬১) নং পরিপত্রটি বাতিল করেছে। ফলে ১৩৯৮-১৪০১ সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ইতোপূর্বেকার ধাপটি বাতিল হয়ে যায়। তবে বাতিলকৃত পরিপত্র মূলে অতিরিক্ত আদায়কৃত কৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন কর ১৬/২/১৪০২ বাং, ৩০/৫/১৫ ইং তারিখের স্মারক নং ভূঃমঃ/শা-৩/কর/১০০/৯২- ১০৬(১০০০) নং পরিপত্রের ৫নং অনুচ্ছেদ অনুসারে সমন্বয় করার বিধান রয়েছে।
১০। শিল্প/বাণিজ্যিক এলাকার ভূমি উন্নয়ন করের হার :
শিল্প ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত ভূমির ভূমি উন্নয়ন করের হার পূর্বে প্রদত্ত ছকে দেখানো হয়েছে। তবে শিল্প/বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত জমি চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে বাস্তবে কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় তা নিরসনের জন্য নিম্নবর্ণিত পন্থা অনুসরণ করতে হবে
(ক) শিল্প/বাণিজ্যিক এলাকার ভূমির মধ্যে যে পরিমাণ ভূমি শিল্প/বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হবে তার কর বাণিজ্যিক হারে আদায় করতে হবে।
(খ) যে পরিমাণ জমি আবাসিক কাজে ব্যবহৃত হবে তার ভূমি উন্নয়ন কর আবাসিক হারে আদায় করতে হবে।
(গ) অব্যবহৃত/পতিত জমির কর কৃষি হারে (১/- টাকা শতাংশ) আদায় করতে হবে। এ সিদ্ধান্ত ১৪০২ বাংলা সন হতে কার্যকর হবে। ১৪০২ বাংলা সনের পূর্বের সকল শ্রেণীর শিল্প এলাকার জমির কর বাণিজ্যিক হারে আদায় করতে হবে। (যোগসূত্র স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শা-৩/কর/১০০/৯২-১০৬ (১০০০) তাং ১৬/২/১৪০২ বাং, ৩০/৫/৯৫ ইং)।
১১। ডেইরী ফার্ম/পোলট্রি ফার্মের ভূমির ভূমি উন্নয়ন করের হার
সরকারী/বেসরকারী পর্যায়ে স্থাপিত বিভিন্ন আকারের ডেইরী/পোলট্রি ফার্মের ভূমি উন্নয়ন করের হার নিম্নরূপ
(১) ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী পর্যায়ে কায়িক শ্রম নির্ভর ছোট আকারের হাঁস-মুরগীর খামার/ডেইরী ফার্মের জন্য ব্যবহৃত ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ ।
(ক) ৫০ হতে ১৪৯ একর পর্যন্ত জমির মালিক প্রান্তিক চাষী বলে গণ্য হবে।
(খ) ১.৫০ হতে ২.৪৯ একর পর্যন্ত জমির মালিক ক্ষুদ্র চাষী বলে গণ্য হবে।
(২) কৃষি জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গবাদিপশু পালন ও হাঁস-মুরগীর খামার স্থাপন করা হলে সে জমির (পরিমাণ যাই হোক) ভূমি উন্নয়ন কর বাণিজ্যিক হারে আদায় করতে হবে।
(৩) শহর, উপশহর, পৌরসভা ও উপজেলা সদরে অবস্থিত বসতবাড়ী সংলগ্ন অকৃষি জমিতে দুধ, মাংস ও ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থাপিত খামারে দুগ্ধবতী গাভীর সংখ্যা যদি অনধিক পনেরটি হয় এবং হাঁস-মুরগীর সংখ্যা যদি অনধিক পাঁচশোটি হয় তবে উক্ত খামারের জমির ভূমি উন্নয়ন কর আবাসিক হারে আদায় করতে হবে।
(৪) সরকারী/আধাসরকারী ও স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা কর্তৃক গবেষণামূলক কাজের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত খামারের ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর আবাসিক হারে আদায় করতে হবে।
(৫) উপরে যে সকল খামারের কর মওকুফ এবং যে সকল খামারের কর আবাসিক হারে আদায়ের কথা বলা হয়েছে সে সকল খামার যদি যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দুধ ও মাংস প্রসেস করে বিপণনের ব্যবস্থা করে তবে উল্লিখিত খামারের ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর বাণিজ্যিক হারে আদায় করতে হবে। এসব খামারের গোচারণ ভূমি এবং হাঁস-মুরগীর খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত জমির খাজনা আবাসিক হারে আদায় করতে হবে।
(৬) ভূমি মন্ত্রণালয় ৪/৯/১৪০৩ বাংলা (১৮/১২/১৯৯৬ ইং) তারিখের স্মারক নং ভূঃমঃ/শা-৩/কর-৫৮/৯৬-২৫৩ (৬৪) পরিপত্রমূলে হাঁস-মুরগীর খামার, গবাদিপশুর খামার প্রতিষ্ঠাকে উৎসাহিতকরণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকৃত ব্যবহার নিশ্চিত হয়ে এ সকল খামারের ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর কৃষি হারে ধার্যের কথা ঘোষণা করেছে। এ সিদ্ধান্ত ১৪০৩ বাংলা সন হতে কার্যকর হয়েছে।
৭। খেলার মাঠ, স্টেডিয়াম, সুইমিংপুল, শরীর চর্চাকেন্দ্র এবং সরকারীভাবে বিহিত সকল ক্রীড়াচত্বরের ভূমি উন্নয়ন কর আবাসিক হারে আদায় করতে হবে। (নং-ভূঃ মঃ/শা-৮ গাজর। ৫১৫/৮৬/১১৭ (৬৪) তাং ১৫/৩/৯০ ইং ।।
১২। হস্তচালিত তাঁতঘরের জমির করের হার :
হস্তচালিত তাঁত শিল্পের ব্যবহারাধীন জমির ভূমি উন্নয়ন কর আবাসিক হারে আদায় করতে হবে, যদি
(ক) তাঁতঘর তাঁতীর নিজস্ব বসতবাড়ীর অভ্যন্তরে বা গৃহ সংলগ্ন হয় ।
(খ) তাঁত সম্পূর্ণ হস্তচালিত ও তাঁতীর নিজস্ব বা পরিবারভুক্ত সদস্যদের শ্রম নির্ভর হয়;
(গ) তাঁতের সংখ্যা সর্বাধিক ৫টি হয়।
ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফের আওতাভূক্ত কৃষি পরিবার কৃষিকাজের অতিরিক্ত পেশা হিসেবে বসত ভিটার অভ্যন্তরে ৫ (পাঁচ) এর কম সংখ্যক হস্তচালিত তাঁত ব্যবহার করে কাপড় তৈরী করলে তাকে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না।
উপরোক্ত ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য সকল ক্ষেত্রে অর্থাৎ তাঁতের সংখ্যা ৫ এর অধিক হলে, পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে বাইরের লোক নিয়োগ করলে, শক্তিচালিত তাঁত ব্যবহার করলে বা তাতীর বসত বাড়ীর অংশ বিশেষে বাণিজ্যিক কার্যক্রম থাকলে ঐ জমির ভূমি উন্নয়ন কর বাণিজ্যক হারে আদায় করতে হবে। (স্মারক নং-ভূঃমঃ/ শা-৩/কর/৮/৯৩/১৭৭ (৬৪) তাং ১৯-০৩-৯৪ ইং)।
ভূমি উন্নয়ন কর বিষয়ক কিছু তথ্য
(১) মসজিদ, ঈদগাহ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা, কবরস্থান, শ্মশানঘাট ইত্যাদির ভূমি উন্নয়ন কর কালেক্টর মওকুফ করতে পারেন। (১৫১ ধারা-এস. এ. এণ্ড টি এ্যাক্ট ও ধারা ৩ ক- ভূমি উন্নয়ন কর অধ্যাঃ১৯৭৬)
(২) প্রতি বছর রিটার্ন-৩ করার সময় তহসিলদারের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জমির শ্রেণী নির্ধারণ/পরিবর্তন করতে পারেন (ভূমি উন্নয়ন কর বিধি ১৯৭৬)। খাস জমির শ্রেণী পরিবর্তনের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর অনুমোদন লাগবে ।
(৩) ভূমি উন্নয়ন কর তিন বছর পর্যন্ত অগ্রিম আদায় করা যায় ।
(৪) কৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন কর দুই কিস্তিতে আদায় করা যায় ।
(৫) এক বছরের বকেয়ার জন্য সার্টিফিকেট কেস করা যায়, তিন বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সার্টিফিকেট কেস দায়ের না করলে তা তামাদি দোষে বারিত হবে। (১৪২ ধারা এস. এ. এণ্ড টি এ্যাক্ট)
(৬) ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের পূর্বের কর সরকার পি ও ৯৬/৭২ দ্বারা মওকুফ করেছেন। ১৯৭১-১৯৭৬ সন পর্যন্ত খতিয়ানে উল্লিখিত খাজনা সরকার মওকুফ করেছেন। তবে সেস কর, শিক্ষা কর, উন্নয়ন কর ইত্যাদি বহাল আছে।
(৭) দাখিলাঃ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে সমমূল্যের একটি দাখিলা বা খাজনার রসিদ পাওয়া খাজনা প্রদানকারীর অধিকার এ রসিদ জমির স্বত্ব ও দখল প্রমাণের প্রাথমিক ও গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হিসেবে আদালতে গণ্য হয়। ব্যাংক ঋণ গ্রহণ বা বাড়ীর প্লান পাস করতেও এটির প্রয়োজন হয়। দাখিলা হচ্ছে মালিকানা বা স্বত্ব হালনাগাদকরণের প্রমাণ পত্র।
(৮) মওকুফ দাখিলাঃ ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফাধীন কৃষি জমির মালিকগণ প্রতি খতিয়ানের জন্য ২/- টাকা হারে রসিদ খরচ দিয়ে মওকুফ দাখিলা সংগ্রহ করতে পারবেন। মওকুফ দাখিলা যে বছরের জন্য দেয়া হবে সে বছর উল্লেখ করে এবং জমির শ্রেণী নিশ্চিত হয়ে দিতে হবে। (স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শা-৩/কর/৯৫/৯৩-৯৯৭ (৬১), তাং ১১-৪-৯৩ ইং)।
(৯) এজমালী জোতের আংশিক কর আদায় ও সার্টিফিকেট সংশোধন এজমালী জোতের সহ-অংশীদারদের মধ্যে যে কোন অংশীদারের ভূমি উন্নয়ন কর (আংশিক) আদায় করা যাবে। এমনকি এজমালী জোতের উপর সার্টিফিকেট মোকদ্দমা দায়ের থাকলেও কোন সহ-শরীক তার অংশের খাজনা পরিশোধ করতে চাইলে তার খাজনা গ্রহণ করে তার নাম সার্টিফিকেট এর দায় থেকে বাদ দিয়ে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে হবে (স্মারক নং-ভূঃ মঃ/শা-৩/১৫-৯১/৮৮/৪৩১, তাং ২৯/১/৯৫ বাং, ১২/৪/৮৮ ইং)।
ভূমি উন্নয়ন করের উপর আপিল
ভূমি উন্নয়ন কর বিধিমালা, ১৯৭৬ এর বিধি ৬ অনুসারে প্রকাশিত ‘প্রাথমিক দাবী” সম্পর্কে কোন ভূমি মালিকের আপত্তি থাকলে তালিকা প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে বিধি- ৭ অনুসারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বা জেলা প্রশাসকের নিকট আপিল করা যাবে। জেলা প্রশাসক আপত্তিকারীকে শুনানী নিয়ে যে আদেশ দিবেন তা-ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
ভূমি উন্নয়ন করের হার ন্যায়ানুগ ও ব্যবহার ভিত্তিক করার বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর আদেশে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদেশ দানের ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের [অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সহ) নিকট আপিল করতে পারবেন যা ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
জেলা প্রশাসকের আদেশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের নিকট আপিল করা যাবে যা ৪৫ দিনে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং বিভাগীয় কমিশনারের আদেশের বিরুদ্ধে ভূমি আপিল বোর্ডের নিকট আদেশের পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে আপিল করা যাবে। জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার নির্ধারিত সময়ে সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে তাদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ভূমি আপিল বোর্ডের নিকট আপিল করা যাবে। আপিল বোর্ড যুক্তসঙ্গত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত দিবেন। আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করা যাবে।
২৫ বিঘার উর্দ্ধে বিবরণী দাখিলের বিধান
রাষ্ট্রপতির আদেশ (পি. ও.) নং ৯৬/৭২ এর বিধান বলে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর তৃতীয় সংশোধনী করা হয়। আইনটি সংশোধন করে একটি নতুন অধ্যায় (VIII B) সংযোজন করা হয়।
উক্ত আইনে সংযোজিত ধারা ১৫১ডি অনুসারে আইনটি জারীর ৯০ দিনের মধ্যে ২৫ বিঘার ঊর্ধ্ব কৃষিজমির মালিককে নির্ধারিত ফরমে রাজস্ব কর্মকর্তার (সহকারী কমিশনার, ভূমি) নিকট জমির বিবরণী বাধ্যতামূলকভাবে দাখিলের বিধান করা হয়।
১৫১-জি ধারাঃ এ ধারামতে আইনটি জারীর পর যে কোন সময় যে কোন ব্যকি ২৫ বিঘা ঊর্ধ্ব কৃষিজমির মালিক হলে, মালিক হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে বিবরণী দাখিল করতে হবে।
১৫১-ই ধারাঃ বিবরণী দাখিল না করলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে জমির তথ্য গোপন করলে শাস্তি ১০০০/- টাকা জরিমানা।
১৫১-এইচ ধারাঃ বিবরণী বহির্ভূত জমি সরকার বরাবরে বাজেয়াপ্ত হবে।
২৫ বিঘার ঊষা বিবরণী (জোত) যেভাবে ভাঙা যায়
২৫ বিঘা (৮ ২৫ একর) পর্যন্ত কৃষি জমির মালিক যেমন যে কোন সময় হওয়া সম্ভব তেমনি বিবরণ দাখিলকারীর মৃত্যু, জমি বিক্রয়, দান ওয়াকফ ইত্যাদির মাধ্যমে যে কোন সময় জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার নিচে নেমে যেতে পারে। অন্যদিকে ১৩৯৮ বাংলা সনের ১ লা বৈশাখ তারিখ হতে সরকার ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষকের কৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ ঘোষণা করেছে।
উক্ত মওকুফের সুবিধা অর্জনের জন্য উপরে উল্লিখিত কারণে যদি কোন বিবরণ দালিকারীর কৃষিজমির পরিমাণ ২৫ বিঘার নিচে নেমে যায় তবে তিনি বা তার উত্তরাধিকারীগণ একই আইনের ১৫১আই ধারা অনুসারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট বিবরণী ভাঙার আবেদন করতে পারবেন। এরূপ আবেদন পাবার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রয়োজনীয় তদন্ত ও শুনানী নিয়ে আবেদন যথাযথ মনে হলে বিবরণী, সংশোধন বা ভাঙার আদেশ দিবেন।
এরূপ আদেশের ফলে আবেদনকারীর কৃষি জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার কম হলে তিনি ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফের সুবিধা পাবেন। তবে জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার নিচে নেমে গেলেও তা রাজস্ব কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর বিবরণীর হারেই দিতে হবে।
তবে মওকুফের সুবিধা লাভের আশায় প্রতারণামূলকভাবে বিবরণ দাতা বেঁচে থাকাকালেই নিজ সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে জমি বন্টন করে জোতের পরিমাণ কমালেও আইনগতভাবে কর মওকুফের সুবিধা পাওয়া যাবে না। বিবরণভুক্ত মালিকের জমি যদি এমন কেউ ক্রয় করে যার মোট জমি ২৫ বিঘার কম তাকে বিবরণীভুক্ত জমি নিজ নামে নামজারী করে আলাদা না করা পয়ন্ত বিবরণীর হারে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে।
তাই বিবরণীভুক্ত জমি কেনার পূর্বে ঐ জমির কোন ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া আছে কিনা তা যাচাই করে কেনা উচিত। এরূপ যাচাই না করার জন্য ক্রেতাকে অনেক সময় বড় অংকের বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হয়। বিবরণীভুক্ত জমি কেনার পর তা নিজ নামে নামজারী করলে এবং এ জমি নিয়ে ক্রেতার মোট জমি ২৫ বিঘার নিচে থাকলে তার ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ হয়ে যাবে।
কার্তিকের পূর্বে আবেদন দাখিল
১৫১-আই (I) উপ-ধারা মতে বিবরণী ভাঙার আবেদন যদি বাংলা বছরের ১লা কার্তিক এর আগে রাজস্ব কর্তৃপক্ষ (উপজেলা ভূমি অফিস) বরাবরে দাখিল করা হয় এবং আবেদনটি মঞ্জুর হয়, তবে আদেশটি ১লা কার্তিক হতে কার্যকর হবে। অর্থাৎ আবেদন দাখিলের বছরের প্রথম ৬ মাসের করসহ বকেয়া (যদি থাকে) দিতে হবে।
কার্তিকে আবেদন দাখিল
১৫১ আই (11) উপ-ধারা মতে বিবরণী ভাড়ার আবেদন যদি ১লা কার্তিকের পরে দাখিল করা হয় তবে তা পরবর্তী বছরের ১লা বৈশাখ থেকে কার্যকর হবে। অর্থাৎ আবেদন যে বছর করা হলো ঐ বছরের পূর্ণ কর দিতে হবে। তাই বিবরণী ভাঙার উপযোগী হওয়ার সাথে সাথে উপজেলা ভূমি অফিসে যথাযথভাবে বিবরণী ভাঙার আবেদন করা উচিত।
আবেদনে তা দাখিলের তারিখ দিয়ে আবেদনটি জমা দিয়ে তার রিসিভড কপি সংগ্রহে রাখতে হবে। এতে পরবর্তীতে আবেদন মঞ্জুর হতে দেরী হলে বা আবেদনটি অফিস হতে খোয়া গেলেও রিসিভ কপি দেখিয়ে প্রমাণ করতে পারলে তা দাখিলের তারিখ হতেই কার্যকরী হবে (এরূপ দেরী যদি আবেদনকারীর ত্রুটির কারণে না হয়ে থাকে)।
ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া রাখার বিপদ
ভূমি উন্নয়ন কর অন্য যে কোন ধরনের করের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম। এর উপর ধার্যকৃত সুদের হারও কম— মাত্র ৬.২৫% টাকা। ভূমি উন্নয়ন কর বার্ষিক ভিত্তিতে দিতে হয় । প্রতি বছরের কর যথাসময়ে পরিশোধ করলে কোন সুদ দিতে হয়। না। তবে কর বকেয়া পড়তে থাকলে সুদের হার বৃদ্ধি পেতে থাকে জ্যামিতিক পদ্ধতিতে।
তা হলো ভূমি উন্নয়ন কর যদি ১ বছরের বকেয়া হয় তবে (মূলত সংশ্লিষ্ট বাংলা বছরের ৩০ চৈত্রের পরই কর বকেয়া বলে গণ্য হয়) মূল পাওনার সাথে ৬.২৫% হারে সুদ যোগ হয়। কর যদি ২ বছরের বকেয়া হয় তবে সুদ দ্বিগুণ হয়ে ১২.৫০% হারে যোগ হয় । অনুরূপভাবে করের বকেয়া যত বছরের হবে, সুদের হার তত ৬.২৫% গুণ বেশি হবে ।
ধরা যাক, কোন ব্যক্তির নিকট বার্ষিক ১২০ টাকা হিসেবে ১৪০২-১৪০৯ সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর পাওনা আছে। এ ক্ষেত্রে ১৪০৯ সনকে যদি হাল সন ধরা হয়। তবে তাকে ৮ বছরের করের সঙ্গে ১৪০৮ সন হতে ১৪০২ সন পর্যন্ত ৭ বছরের সুদও দিতে হবে।
তাহলে ঐ ব্যক্তিকে ৮ বছরের ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ (১২০ x ৮) ৯৬০ টাকা এবং এর সঙ্গে ১২০ টাকা খাজনার উপর ১৪০৮ সনের জন্য (120 x 6.25% 1 ) = ৭.৫০ টাকা, ১৪০৭ সনের জন্য (১২০ X ৬.25% x 2 ) = ১৫ টাকা, অনুরূপভাবে ১৪০৬ সনের জন্য ২২.৫০ টাকা, ১৪০৫ সনের জন্য ৩০ টাকা, ১৪০৪ সনের জন্য ৩৭.৫০ টাকা, ১৪০৩ সনের জন্য ৪৫ টাকা এবং ১৪০২ সনের জন্য ৫২.৫০ টাকা মোট ২১০ টাকা সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ ৬৯০ টাকা খাজনার সঙ্গে অতিরিক্ত ২১০ টাকা সুদ দিতে হবে। উল্লিখিত সুদ সহজ পদ্ধতিতে নিম্নের সূত্র অনুসারে বের করা যায়ঃ
সুদ নির্ণয়ের সহজ পদ্ধতি
বকেয়া সন | বকেয়া সনের ক্রম (নিচ থেকে) | সুদ বছরের ইউনিট (ক্রমসমূহের যোগ) | বার্ষিক খাজনা | সুদের হার |
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ |
১৪০২ | ৭ | (৭+৬+৫+৪+৩+২+১+০)=২৮ | ১২০ | ৬.২৫% |
১৪০৩ | ৬ | |||
১৪০৪ | ৫ | |||
১৪০৫ | ৪ | |||
১৪০৬ | ৩ | |||
১৪০৭ | ২ | |||
১৪০৮ | ১ | |||
১৪০৯ | ০ |
সূত্র = সুদ বছরের মোট ইউনিট *বার্ষিক খাজনা* সুদের হা
= ২৮*১২০* ৬.২৫%
অতএব সুদ = ২১০ টাকা
[বি.দ্র. খাজনার ধাপ যদি একাধিক হয় তবে “সুদ বছরের ইউনিট” একইভাবে বের করে খাজনার যত ধাপ সুদ নির্ণয়ের সূত্রটি তত বার ব্যবহার করে সুদ নির্ণয় করে তা যোগ করলেই মোট সুদ পাওয়া যাবে।
আরও দেখুনঃ