আজকে আমরা কারাগারের শ্রেণী বিভাগ সম্পর্কে আলোচনা করবো । যা জেল কোডের অন্তর্গত।
কারাগারের শ্রেণী বিভাগ
বিধি-২ কারাগারের শ্রেণী বিভাগ নিম্নরূপ হবে-
(১) কেন্দ্রীয় কারাগার : ৬ মাস বা ততোধিক মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত বন্দীদের আটক রাখার জন্য;
(২) জেলা কারাগার : জেলা সদরে স্থাপিত ফৌজদারি ও দেওয়ানী বন্দীদের আটক রাখার জন্য;
(৩) সাবসিডিয়ারি কারাগার : মহকুমা সদরে স্থাপিত কেবল মাত্র ফৌজদারি বন্দীদের আটক রাখার জন্য; এবং
(৪) বিশেষ কারাগার : বিশেষ শ্রেণীর বন্দীদের আটক রাখার জন্য ।
টীকা-১। বাংলাদেশে বর্তমানে ১০ টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫ টি জেলা কারাগার রয়েছে। মহকুমা বিলুপ্ত হবার ফলে বাংলাদেশে এখন কোন সাবসিডিয়ারি কারাগার (সাব-জেল) নেই। সকল মহকুমা কারাগার জেলা কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছে।
টীকা-২। বাংলাদেশে বর্তমানে কোন বিশেষ কারাগার নেই।
টীকা-৩। কারা আইনের ৩(১) ধারা মোতাবেক কোন স্থান কারাগার হিসেবে গণ্য হবার জনে ঐ স্থানকে সরকার কর্তৃক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
টীকা-৪। থানা হাজত, জিজ্ঞাসা (ইন্টোরোগেশন) সেল, কোর্ট হাজত, সামরিক হাজত, কিশোর অপরাধ সংশোধনী কেন্দ্র, নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার জন্যে গঠিত আশ্রয় কেন্দ্র বা ‘সেফ কাষ্টডী’, উম্মাদ আশ্রয় কেন্দ্র, মানসিক হাসপাতাল প্রভৃতি কারাগার নয় বিধায় ঐ সব ক্ষেত্রে জেল কোড প্রযোজ্য নয়।
টীকা-৫। বাংলাদেশে ১৬ টি থানা কারাগার রয়েছে, বর্তমানে এসব কারাগারে কোন বন্দী রাখা হয় না।
বিধি ৩-৬। প্রয়োগ নেই।
বিধি-৭। আইনের শর্ত এই যে, সিভিল বন্দীদেরকে ফৌজদারি বন্দীদের থেকে পৃথক রাখতে হবে ৷ সিভিল বন্দীদের জন্যে কারাগারের যে কোন একটি অংশকে পৃথকভাবে স্থাপন করা যেতে পারে যাতে সেখানে কেবল মাত্র সিভিল বন্দীদেরকে রাখা যায়।
বিধি-৮। প্রয়োগ নেই।
বিধি-৯। প্রত্যেক কারাগারে একজন সুপারিনটেন্ডেন্ট, একজন মেডিকেল অফিসার (যিনি সুপারিনটেন্ডেন্টও হতে পারবেন), একজন মেডিকেল সাব- অর্ডিনেট, একজন জেলার এবং সরকার যে রূপ প্রয়োজন মনে করে সেরূপ সংখ্যক অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন।
টীকা-১। বর্তমানে কারাগারসমূহে নিম্নোক্ত পদবীর কমকর্তা-কর্মচারী রয়েছে –
সাধারণ বিভাগ
১। সিনিয়র জেল সুপার ( শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কারাগারে)
২। জেল সুপার (জেলা কারাগারে)
৩। ডেপুটি জেল সুপার (শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কারাগারে)
৪। জেলার
৫। ডেপুটি জেলার
৬। সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর (শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কারাগারে)
৭। সর্বপ্রধান কারারক্ষী
৮। প্রধান কারারক্ষী
৯। কারারক্ষী
১০। মেট্রন / মহিলা কারারক্ষী
১১। মহিলা কারারক্ষী
১২। উচ্চমান সহকারী (শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কারাগারে)
১৩। কারা সহকারী-কাম- মুদ্রাক্ষরিক
১৪ । কারা শিক্ষক (শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কারাগারে )
১৫। সহকারী-কাম-বিক্রেতা (রেশন দোকান)
স্বাস্থ্য বিভাগ
১৬। সহকারী সার্জন
১৭। উপ-সহকারী সার্জন
১৮। ফার্মাসিস্ট
১৯। ডিপ্লোমা নার্স
২০। পুরুষ সেবক
উৎপাদন বিভাগ
২১। হিসাব রক্ষক
২২। সহকারী হিসাব রক্ষক
২৩। ফ্যাক্টরী ওভারশিয়ার
২৪। টাস্ক টেকার
২৫। ব্লাক স্মিথ
২৬। ষ্টোর কিপার
২৭। বুক বাইন্ডিং ইনস্টাক্টর
২৮। নিম্নমান সহকারী-কাম- মুদ্রাক্ষরিক
২৯। দর্জি মাষ্টার
৩০। দর্জি
৩১। সহকারী-কাম-বিক্রেতা শো রুম
টীকা-২। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে যক্ষা রোগীদের চিকিৎসার জন্যে একটি জুনিয়র কনসালটেন্টের পদ রয়েছে।
টীকা-৩। এ ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত সম্ভ্রম বন্দীদের মধ্যে হতে ওভারশিয়ার, প্রহরী, নাইট ওয়াচম্যান, রাইটার, বাবুর্চী, সুইপার, ধোপা নাপিত, মালী প্রভৃতি নিয়োগ করা হয়।
বিধি-১০। কারা মহাপরিদর্শক নিয়োগ- বর্তমানে কর্মকর্তা ও কর্মচারী (কারা অধিদপ্তর) নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮৪ অনুযায়ী কারা মহাপরিদর্শক নিয়োগ করা হয়।
বিধি ১১-১৬। অকার্যকর।
বিধি-১৭। সরকারের বিশেষ অনুমোদন ছাড়া কোন স্থায়ী পদ গ্রহণ যোগ্য হবে না। কারা মহাপরিদর্শকের অনুমোদন ব্যতীত অস্থায়ী নিয়োগ যোগ্য কোন পদে নিয়োগ দেয়া যাবে না।
বিধি ১৮-২০। অকার্যকর।
আরও দেখুনঃ