আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় শিশু আইন বিবিধ
Table of Contents
শিশু আইন বিবিধ
৬৬। বয়স অনুমান ও নির্ধারণ।-
(১) অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হইয়া বা না হইয়া কোন ব্যক্তি সাক্ষ্যদানের উদ্দেশ্য ব্যতীত প্রকারান্তরে কোন ফৌজদারি আদালতে আনীত হইলে, এবং আদালতের নিকট তাহাকে শিশু বলিয়া প্রতীয়মান হইলে আদালত উক্ত ব্যক্তির বয়স সম্পর্কে তদন্ত করিবেন এবং তদুদ্দেশ্যে মামলার শুনানিকালে যে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায় তাহা গ্রহণ করিবেন এবং তাহার বয়সের যতদূর সম্ভব কাছাকাছি বর্ণনা দিয়া উক্ত তদন্ত ফল লিপিবদ্ধ করিবেন।
(২) আদালতের আদেশ অথবা রায় এইরূপ ব্যক্তির বয়স নির্ভুলভাবে আদালত কর্তৃক বর্ণিত হয় নাই বলিয়া পরবর্তীকালে প্রমাণ পাওয়া গেলেও বাতিল হইবে না এবং আদালতে হাজিরকৃত ব্যক্তির বয়স বলিয়া আদালত কর্তৃক অনুমিত বা ঘোষিত বয়স এই আইনের উদ্দেশ্যে উক্ত ব্যক্তির প্রকৃত বয়স বলিয়া গণ্য হইবে এবং যে ক্ষেত্রে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, হাজিরকৃত ব্যক্তির বয়স ১৬ বৎসর বা তদূর্ধ সেক্ষেত্রে এই ব্যক্তি এই আইনের উদ্দেশ্যে শিশু বলিয়া গণ্য হইবে না ।
৬৭। খালাস।-
(১) সরকার যে কোন সময়ে কোন শিশু অথবা বাল- অপরাধীকে প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউট অথবা অনুমোদিত আবাস হইতে সম্পূর্ণভাবে অথবা সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট শর্তে খালাসের আদেশ প্রদান করিতে পারেন।
(২) সরকার যে কোন সময়ে, কোন শিশুকে যে ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে এই আইনের অধীনে সোপর্দ করা হয়, তাহার নিকট হইতে সম্পূর্ণভাবে অথবা সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট শর্তে মুক্তি দিতে পারেন।
৬৮ । বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বদলি।-
(১) সরকার কোন শিশু অথবা বাল-অপরাধীকে এক প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউটে অথবা অনুমোদিত আবাস হইতে অন্য প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউট বা অনুমোদিত আবাসে বদলির আদেশ দিতে পারেন।
(২) প্রধান পরিদর্শক কোন শিশুকে এ প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউট অথবা অনুমোদিত আবাস হইতে অন্য প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউট বা অনুমোদিত আবাসে বদলির আদেশ দিতে পারেন ।
৬৯। মিথ্যা তথ্য প্রদানের জন্য ক্ষতিপূরণ।-
(১) ৬১ ধারার বিধানের অধীনে কোন ব্যক্তি যে মামলা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করিয়াছে সেই মামলা সম্পর্কে আদালত ইহার মতে প্রয়োজনীয় তদন্ত করিবার পর যদি মনে করেন যে, এইরূপ তথ্য মিথ্যা এবং তুচ্ছ এবং বিরক্তিকর তাহা হইলে আদালত কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া নির্দেশ দিবেন যে এইরূপ তথ্য সরবরাহকারী, যাহার বিপক্ষে উক্ত তথ্য প্রদান করিয়াছে তাহাকে অনূর্ধ্ব ১০০ টাকা পর্যন্ত যে পরিমাণ অর্থ আদালত নির্ধারণ করিবে সেই পরিমান অর্থ ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদান করিবে ।
(২) ক্ষতিপূরণ দানের আদেশ প্রদানের পূর্বে আদালত, তথ্য প্রদানকারী উক্ত ক্ষতিপুরণ কেন প্রদান করিবেন না তাহার কারণ দর্শাইবার জন্য তাহাকে আহবান জানাইবেন এবং তথ্য প্রদানকারী কোন কারণ দর্শাইলে তাহা বিবেচনা করিয়া দেখিবেন।
(৩) ক্ষতিপূরণ দানের নির্দেশমূলক আদেশ দ্বারা আদালত আরও আদেশ প্রদান করিতে পারেন যে, অনুরূপ ক্ষতিপুরণ দানে ব্যর্থ ব্যক্তি অনধিক ৩০ দিনের মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করিবে ।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীনে কোন ব্যক্তি কারাদণ্ড প্রাপ্ত হইলে দণ্ড বিধির (১৮৬০ সনের ৪৫ নং আইন) ৬৮ ও ৬৯ ধারার বিধানাবলী যতদূর সম্ভব ততদূর প্রযোজ্য হইবে।
(৫) এই ধারার অধীনে ক্ষতিপূরণ দানের জন্য আদিষ্ট ব্যক্তি এইরূপ আদেশ প্রাপ্তির কারণে উক্ত তথ্য সংক্রান্ত কোন দেওয়ানী দায়-দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি পাইবে না, তবে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদত্ত যে কোন অর্থ এহেন বিষয় সম্পর্কিত কোন পরবর্তীকালীন দেওয়ানী মোকদ্দমার ক্ষেত্রে হিসাবের অর্ন্তভুক্ত হইবে, বিবেচনা করা হইবে।
৭০। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে অযোগ্যতা নিরসন।-
শিশু কোন অপরাধ করিয়া ফেলিয়াছে এই অবস্থায় তাহাকে পাওয়া গেলে তাহার অপরাধ সংঘটনের ঘটনা দণ্ড বিধির ৭৫ ধারার অধীনে অথবা কার্যবিধির ৫৬৫ ধারার অধীনে কার্যকর হইবে না, অথবা কোন অফিসে চাকরি বা আইনের অধীনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে অযোগ্যতা হিসাবে কাজ করিবে না ।
৭১। ‘সাজা’ এবং ‘দণ্ডিত’ শব্দগুলি শিশুদের সম্পর্কে ব্যবহৃত হইবে না।-
এই আইনে যেইরূপ বিধান করা হইয়াছে সেইরূপে ব্যতীত, এই আইনের অধীনে যে সকল শিশু ও বাল অপরাধী সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাহাদের ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত এবং দণ্ডিত শব্দগুলির ব্যবহার চলিবে না এবং কোন আইনে কোন ব্যক্তির সম্পর্কে দোষী সাব্যস্ত অথবা দণ্ডাদেশ বলিতে শিশু অথবা বাল-অপরাধীর ক্ষেত্রে কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি দোষী সাব্যস্তকরণ অথবা উহার উপর প্রদত্ত কোন আদেশ বুঝিতে হইবে বা ব্যাখাত হইবে ।
৭২। শিশুর উপর জিম্মাদারের নিয়ন্ত্রণ।-
এই আইনের বিধানাবলীর অধীনে যে ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে শিশুকে সোপর্দ করা হইয়াছে, সেই ব্যক্তি শিশুটিকে উহার পিতার ন্যায় নিয়ন্ত্রণ করিবেন এবং তাহার ভরণপোষণের জন্য দায়ী থাকিবেন, এবং শিশুটিকে তাহার পিতামাতা অথবা অন্য কোনো ব্যক্তি দাবী করা সত্ত্বেও আদালত কর্তৃক বর্ণিত সময়ের জন্য শিশুটি অব্যাহত ভাবে উক্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে থাকিবে ।
৭৩। এই আইনের অধীনে গৃহীত মুচলেকা।
কার্যবিধির ৪২ অধ্যায়ের বিধানাবলী যতদূর সম্ভব, হইবে । এই আইনের অধীনে গৃহীত মুচলেকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
৭৪ । প্রধান পরিদর্শক, প্রবেশন অফিসার, প্রভৃতি সরকারী কর্মচারী।-
প্রধান পরিদর্শক, সহকারী পরিদর্শকগণ, প্রবেশন অফিসারগণ এবং এই আইনের কোন বিধানের অধীনে কাজ করিতে অনুমতি প্রদত্ত অথবা অধিকার প্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তি দণ্ড বিধির (১৮৬০ সনের ৪৫ নং আইন) এর ২১ ধারার অর্থ অনুযায়ী গণ কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন।
৭৫। এই আইনে গৃহীত ব্যবস্থার হেফাজত।-
এই আইনের অধীনে কোন ব্যক্তি সরল বিশ্বাসে কোন কাজ করিয়া থাকিলে বা করার অভিপ্রায় করিলে তজ্জন্য তাহার বিরুদ্ধে কোন মোকদ্দমা মামলা অথবা আইনানুগ কার্যধারা রুজু করা চলিবে না ।
৭৬। আপীল ও পুনর্বিচার।-
(১) কার্যবিধিতে কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও এই আইনের বিধানাবলীর অধীনে কোন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের উপর আপীল করা চলিবে-
(ক) দায়রা আদালতে, যদি আদেশটি কোন শিশু আদালত অথবা ৪ ধারার অধীনে ক্ষমতা প্রদত্ত কোন ম্যাজিষ্ট্রেট প্রদান করিয়া থাকেন ; এবং
(খ) হাইকোর্ট বিভাগে, যদি আদেশটি কোন দায়রা জজ আদালত অথবা অতিরিক্ত দায়রা জজের আদালত অথবা সহকারী দায়রা জজের আদালত প্রদান করিয়া থাকেন।
(২) এই আইনের অধীনে কোন আদালত-কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ পুনর্বিচার করার জন্যে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ণ করিবে না ।
৭৭। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা।-
(১)সরকার এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণ কল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
(২) পূর্বোক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতা ক্ষুণ্ণ না করিয়া বিশেষ করিয়া নিম্ন লিখিত বিষয়ে বিধান করিতে পারিবেন –
(ক) কিশোর আদালত এবং ৪ ধারার অধীনে ক্ষমতা প্রদত্ত অন্যান্য আদালত-কর্তৃক এই আইনের অধীনে মামলার বিচার ও কার্যধারার শুনানির জন্য অনুসরণীয় পদ্ধতি ;
(খ) ধারা ৭(১) এর অধীনে কিশোর আদালতের এজলাসের স্থান, তারিখ ও পদ্ধতি ;
(গ) এই আইনের উদ্দেশ্যে যে সকল শর্ত সাপেক্ষ প্রতিষ্ঠানসমূহ শিল্প বিদ্যালয়সমূহ অথবা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ, প্রত্যায়ন অথবা অনুমোদিত আবাসকে স্বীকৃতিদান করা যাইবে সেই শর্তাবলী
(ঘ) প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউট সমূহের সংস্থাপন, প্রত্যয়ন, ব্যবস্থাপনা রক্ষনাবেক্ষণ, রেকর্ড ও হিসাব রক্ষণ সংক্রান্ত ;
(ঙ) প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউট সমূহের বাসিন্দাদের শিক্ষা-দীক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং তাহাদের অনুপস্থিতি হেতু ছুটি ;
(চ) পরিদর্শকগণের নিয়োগ ও চাকরির মেয়াদ ;
(ছ) প্রত্যায়িত ইষ্টিটিউট ও অনুমোদিত আবাসসমূহের পরিদর্শন ;
(জ) প্রত্যায়িত ইনষ্টিটিউট ও অনুমোদিত আবাসসমূহের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা ;
(ঝ) যে সকল শর্ত সাপেক্ষ প্রতিষ্ঠানসমূহকে ১৪ (২) ধারার উদ্দেশ্যে অনুমোদিত স্থানরূপে স্বীকৃতি দান করা হইবে ; ;
(ঞ) প্রধান পরিদর্শক ও প্রবেশন অফিসারের ক্ষমতা ও কতর্ব্য
(ট) ৩২ ও ৫৫ ধারার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ক্ষমতা প্রদান পদ্ধতি;
(ঠ) ৫৮ ধারার অনুবিধির অধীনে প্রদেয় মুচলেকার ফরম;
(ড) শিশুকে ৬১ (১) ধারার অধীনে নিরাপদ স্থানে পাঠাইবার পদ্ধতি ;
(ঢ) শিশুর ভরণ পোষণের জন্য অবদান রাখিতে ;
(ণ) ৬৪ ধারার অধীনে শিশুকে লাইসেন্সমূলে খালাস দেওয়ার শর্তাবলী এবং এইরূপ লাইসেন্সের ফরম;
(ত) শিশুকে এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে সোপর্দের শর্তাবলী এবং সোপর্দকৃত শিশুর প্রতি এইরূপ ব্যক্তির বাধ্যবাধকতা ; এবং
(থ) গ্রেফতারকৃত অথবা বিচারের জন্য পুলিশ হেফাজতে প্রেরিত শিশুকে আটক রাখার পদ্ধতি।
৭৮ । রহিতকরণ, ইত্যাদি।-
(১) বেঙ্গল চিলড্রেন এ্যাক্ট, ১৯২২(১৯২২ সনের ২ নং আইন) এতদ্বারা রহিত করা হইল ।
(২) যে এলাকায় এই আইন ১(২) ধারার অধীনে বলবৎ করা হয় সেই এলাকায় বলবৎ এর তারিখ হইতে রিফরমেটরী স্কুল আইন,১৮৯৭(১৮৯৭ সনের ৮ নং আইন) রহিত করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) যে এলাকায় এই আইন বলবৎ করা হইবে সেই এলাকায় ফৌজদারি কার্যবিধির ২৯-খ এবং ৩৯৯ ধারার বিধানাবলীর প্রয়োগ রহিত হইবে।
আরও দেখুনঃ